নীলফামারী ৩১ আগস্ট॥ স্কুল ছাত্রীর বাল্যবিয়ের অনুষ্ঠান চলছে। বরযাত্রী এসে হাজির। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে গেলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নাজমুন নাহার। সঙ্গে পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। পরিস্থিতি ঘোলাটে দেখে বাল্য বিয়ের কনে নবম শ্রেনীর ছাত্রীর অভিভাবকরা ঠিক সিনেমা নাটকের মতো কাহিনী তৈরী করে কৌশল অবলম্বন করলেন। তারা এটি বাল্য বিয়ে নয় প্রমান করতে ভ্রাম্যমান আদালতের সামনে হাজির করলেন বাল্য বিয়ের কনে নবম শ্রেনীর ছাত্রীর ২২ বছরের ভাবী লাকী আক্তারকে কনে সাজিয়ে। এমন সময় ধরা পড়ে যায়, কনে সেজে যে নারী ভ্রাম্যমান আদালতের সামনে দাঁড়িয়েছে তার গর্ভে ৭ মাসের সন্তান। ভ্রাম্যমান আদালত বিষয়টি ধরার সঙ্গে সঙ্গে যার বাল্য বিয়ে সেই স্কুল ছাত্রী ঘর হতে বেরিয়ে জানান দিলো তাকে জোড় করে বাল্য বিয়ে দেয়া হচ্ছে। ছাত্রীটি উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হবার মনবাসনা প্রকাশ করে তার বাল্য বিয়ে রুখে দেবার জন্য ভ্রাম্যমান আদালতার কাছে হাতজোড় করে অনুরোধ করতে থাকতে। সইে সঙ্গে অপরাধ স্বীকার করে ছাত্রীর বাবা মা ও ভাবী ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে। এ সময় ভ্রাম্যমান আদালত বাল্য বিয়ে বন্ধ ও অর্থদন্ড ও অভিভাবকদের কাছে মুচলেকা আদায় করে।
এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) রাত ১২টার দিকে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের দোহলপাড়া গ্রামে।
জানা যায়, কনে ওই গ্রামের রমজান আলীর মেয়ে ও দোহলপাড়া আদর্শ স্কুল এ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেনীর ছাত্রী আসমা আক্তার। অপর দিকে বর হলো একই উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের ঠাকুরগঞ্জ গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে জিয়ারুল ইসলাম(২২)।
একদিকে আইনকে বৃদ্ধাআঙুল দেখিয়ে স্কুল ছাত্রী মেয়ের বাল্য বিয়ের আয়োজন অপর দিকে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা এবং সরকারী কাজে বাধা প্রদানের অপরাধে ভ্রাম্যমান আদালত স্কুল ছাত্রীর বাবা ও মাকে ১০ হাজার এবং বরকে ৩ হাজার সহ মোট ১৩ হাজার টাকা জরিমানা করে। সেই সঙ্গে স্কুল ছাত্রীর মেয়ের বাল্য বিয়ে না দেয়ার মুচলেকা লিখে নেয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন খগাখড়িবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিথন, ইউপি সদস্য মকবুল হোসেন, ডিমলা থানার এসআই ইলিয়াছ আলীসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন