রবিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

বাগেরহাটে রোগী ও তার স্বজনকে চড় দিলেন চিকিৎসক।

বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসকের হাতে রোগী ও স্বজনদেরকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার (০৯ সেপ্টেম্বর) সকালে গাইনি ওয়ার্ডের দুই প্রসূতি ও এক রোগীর স্বজনকে মারধর করেন হাসপাতালের গাইনি কনসালটেন্ট ডা. আবুল কালাম আজাদ। এ ঘটনায় হাসপাতালের শীর্ষ কর্মকর্তা সিভিল সার্জন দুঃখ প্রকাশ করেছেন। সেই সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন।

তবে, ঘটনার পরপরই গাইনি কনসালটেন্ট ডা. আবুল কালাম আজাদ সিভিল সার্জন অফিসে যাওয়ার কথা বলে হাসপাতাল ত্যাগ করেন। 

মারধরের শিকার রোগীরা হলেন- বাগেরহাট সদর উপজেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার পঞ্চমালা গ্রামের জাহিদুল বাবুর স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২৮), গাজীরঘাট গ্রামের আলম শেখের স্ত্রী রজীনা বেগম (২০), এবং রজীনার মা নাছিমা বেগম (৪৫)।

নাছিমা বেগম বলেন, ‘সন্তান প্রসবের জন্য রোববার ভোরে বাড়ি থেকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে আমার মেয়েকে নিয়ে আসি । তখন ডাক্তার ভর্তি করে নেন। আজ সকাল ১০টার দিকে ডা. আবুল আজাদ আসেন নিয়মিত রাউন্ড দিতে। তখন আমার মেয়ের প্রসব বেদনা শুরু হয়। আমাকে মেয়ে জড়িয়ে ধরে ছিল। ডাক্তার সাহেব এসে আমাকে বের হতে বলেন। আমার বের হতে দেরী হলে আমাকে দুটি চড় মারেন। আমি চড় খেয়ে ঘুরে পড়ে যাই। ডাক্তার সাহেব আমার চিকিৎসা না দিয়ে মেয়ের মাথার উপর থাপ্পড় মারে।’

সদ্য ভূমিষ্ট সন্তানের মা রোজিনা বেগম বলেন, ‘সন্তান প্রসবের জন্য হাসপাতালে এসে মার খেলাম। এর থেকে কষ্টের আর কি আছে। আমরা এ ডাক্তারের বিচার চাই।’

অন্য রোগী ফাতেমা বেগম বলেন, ‘রোজিনাকে মারধর করে আমার বেডে আসেন। তখন আমাকে বলে এ তোর তো কাল যাওয়ার কথা, তুই যাসনি কেন। এ বলেই আমার মাথায় থাপ্পড় দেয়।’

গাইনি ওয়ার্ডের অন্য আরেক রোগী মাহিনুর বলেন, ‘ডাক্তার এভাবে রোগীকে মারধর করে তা আগে কখনও দেখিনি। সকালে এ ডাক্তার মারলেন। এর আগে শনিবার রাতে আলট্রাসোনোগ্রাম করার সময় ডাক্তার আমার সঙ্গে খুবই খারাপ ব্যবহার করেন। গাইনি ওয়ার্ডে একজন নারী চিকিৎসক দিলে এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানো যেত।’

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. অরুণ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি হাসপাতালে ছিলাম। খবর পেয়ে আমি ওয়ার্ড মাস্টারকে গাইনি ওয়ার্ডে পাঠাই। পরে মারধরের শিকার রোগীরা এসে আমার কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগের বিষয়ে উপস্থিত সকলের কথা শুনে সত্যতা পাই। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। যত দ্রুতই সম্ভব তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন